নামটা  যেন কি? ইস্‌ মনে পড়ছেনা, এই বল্‌না…

গত শনিবার ১৪/৬/২৫ আমাদের বাড়ীতে ভাই বোনদের আড্ডা বসেছিল। খোকন, মিঠু,ঝুনকু, ভান্টুলি,ঝুন্টু আর কৌশিকী আর আমরা দু’জন। সব মিলিয়ে আমরা আট জন। যখন কাজ করতাম তখন শনি আর রবিবার ছিল ছুটির দিন। কিন্তু এখন কাজ থেকে অবসর নেবার পরে তো রোজই ছুটি,যে কোন একদিন বসলেই হয়।  তবু কেন জানিনা শনি আর রবিবারের ছুটির আমেজ টা আজও মন থেকে মুছে যায়নি।

এই দুই দিনের মধ্যে শনিবারটা ছুটি হিসেবে রবিবারের থেকেও ভাল কেননা যখন কাজ করতাম তখন রবিবার কেটে গেলে সন্ধ্যা থেকে পরের দিন আবার কাজে যেতে হবে ভেবে মন খারাপ হয়ে থাকতো শনিবার সন্ধ্যায় মন খারাপ হতোনা, পরের দিনটাও তো ছুটি।   কুয়েতে প্রথম গিয়ে শুনি শুক্রবার ওদের জুম্মাবার, সেদিনই ওদের সপ্তাহান্তের ছুটি। রবিবার কাজ করতে যেতে কি যে খারাপ লাগতো। যাক, জীবনের সেই চ্যাপ্টার এখন শেষ।

সবাই বেলা বারোটার মধ্যে কথামতো চলে এলো। আমি আর খোকন সিঙ্গল মল্ট্‌ নিয়ে বসলাম, বাকিরা সবাই পেপসি আর কোক। সুভদ্রা সাথে চিপ্‌স্‌ আর কাঠবাদাম (Almonds) প্লেটে সাজিয়ে এনে দিলো।

আড্ডা ক্রমশঃ জমে উঠলো।

খোকন মিঠুর সাথে আমরা কিছুদিন আগে অমৃতসর ডালহাউসী আর ধর্মশালা ঘুরে এসেছি। আমরা দিল্লী হয়ে গেছি, খোকনরা গেছে কলকাতা থেকে। সম্প্রতি পাকিস্তানের সাথে অপারেশন সিঁদুরের যুদ্ধ শেষ হয়েছে, অমৃতসর শহরটা পাকিস্তান বর্ডারের খুব কাছে, কিছুদিন আগে ওখানে বোমা পড়েছে, ব্ল্যাক আউটও ছিল। ওয়াগা আতারী বর্ডার বন্ধ। এই সময়ে ওই জায়গায় যাওয়া কি ঠিক হচ্ছে?

দিল্লীতে মুকুর সাথে কথা হলো। অমৃতসরের কাছে গুরদাসপুরে মুকু অনেকদিন পোস্টেড ছিল। ওই জায়গাটা তার খুব পরিচিত। তার মত হলো এখন ওইসব জায়গায় না যাওয়াই ভালো। কিন্তু টিকিট কাটা হয়ে গেছে, গাড়ী হোটেল ইত্যাদি সব কিছু বন্দোবস্ত হয়ে গেছে, তা ছাড়া যুদ্ধ তো শেষ। Cease Fire declare করা হয়েছে,এখন পিছিয়ে আসা মুস্কিল।

আমার কাছ থেকে নাম্বার নিয়ে মুকু খোকন কে ফোন করেছিল। খোকন আমাদের সেই ফোন কল টা অভিনয় করে দেখালো। সে বেশ ভাল অভিনয় করে। তার গলার modulation ও দারুণ, কানের কাছে হাত রেখে অনেকটা যেন টেলিফোনে কথা বলছে সেই ভাবে মুকুর গলাটা যথাসম্ভব গম্ভীর আর ভারী (মুকু দা’ কথা বলে কর্ণেল সাহেবের মতো বেশ আদেশের ভঙ্গীতে) করে আর নিজের গলাটা কিছুটা নরম আর মিনমিনে করে সে তাদের কথোপকথন হুবহু বলে গেল।    

মুকুঃ হ্যালো, খোকন?

খোকনঃ মুকুদা’, বলো?

মুকুঃ মান্টুর কাছে শুনলাম তোরা নাকি অমৃতসর যাচ্ছিস?

খোকন (আমতা আমতা করে) – হ্যাঁ, সেরকমই তো ঠিক আছে।

মুকুঃ না না এখন যাস, না। আমি মান্টুকেও বলেছি।

খোকনের স্টকে মুকুর সাথে এইরকম অনেক টেলিফোন কথোপকথন রয়েছে।  খোকন সেই গুলো ও আমাদের শোনালো।

প্রথম টা জন্মদিন নিয়েঃ

মুকুঃ হ্যালো, খোকন?

খোকনঃ মুকুদা’ , বলো?

মুকুঃ  Happy birthday!

খোকন (আমতা আমতা করে) – আজ তো আমার জন্মদিন নয়?

মুকুঃ (খুব অবাক হয়ে) সে কি? তাহলে আজ কা’র জন্মদিন?

আর এটা হলো বাড়ীর ঠিকানা নিয়েঃ

মুকুঃ হ্যালো, খোকন?

খোকনঃ মুকুদা’ আমি দিল্লী এসেছি। তোমার সাথে দেখা করতে আসবো।

মুকুঃ  চলে আয়!

খোকন (আমতা আমতা করে) –  তোমার বাড়ীর ঠিকানা টা দেবে?

মুকুঃ ঠিকানা? দাঁড়া দিচ্ছি।

বেশ কিছুক্ষণ পর~

মুকুঃ খোকন, খুঁজে পাচ্ছিনা রে।

খোকন – কি খুঁজে পাচ্ছোনা?

মুকুঃ আমার চশমাটা! কোথায় যে রাখলাম!

এই গল্পটা শুনে ভান্টুলী অবাক হয়ে বললো মুকুদা’  U 18 এর ঠিকানা  ভুলে গেছে? আমার তো এখনো U 18 এর ফোন নাম্বারও মনে আছে।

ন’কাকা কাকীমা অনেক দিন দিল্লীতে জ্যেঠুর বাড়ীতে গ্যারেজের ওপরে একটা ঘর নিয়ে থাকতেন। ভান্টূলি বললো রাস্তার উল্টোদিকে বিপুমামার বাড়ী ছিল V 16  Green Park Extension । বিপুমামা  মুম্বাই তে  ফিল্ম  প্রোডিউসার ছিলেন, মাঝে মাঝে ওনার বাড়ীতে  বলিউডের ফিল্ম স্টার রা এসে থাকতো।  ওই বাড়ীতে ফোন ছিলনা, ফোন করার দরকার পড়লে তাদের বলা ছিল U 18 এ গিয়ে ফোন করতে।

একবার নাকি বিখ্যাত ফিল্মস্টার জিতেন্দ্র ফোন করতে এসেছিলেন। জ্যেঠু  তখন বাড়ীতে খালি গায়ে জাঙ্গিয়া পরে মুগুর ভাঁজছেন। বাড়ীতে ছিল শিখা তার তখনো বিয়ে হয়নি, সে তো সামনা সামনি জিতেন্দ্র কে দেখে কি করবে ভেবে পাচ্ছেনা। জিতেন্দ্র যখন বললো আমি কি একটা ফোন করতে পারি, শিখা ছূটে নাকি জ্যেঠুকে বলেছিল বাবা বাবা জিতেন্দ্র এসেছে ফোন করতে…

জ্যেঠু নাকি বিরক্ত হয়ে বলেছিলেন জিতেন্দ্রটা আবার কে?

শিখা নাকি জ্যেঠুকে এক ধমক  দিয়ে  বলেছিল,তুমি জিতেন্দ্রর নাম শোনোনি? আশ্চর্য্য! যাও তাড়াতাড়ি পাজামা পাঞ্জাবি পরে এসো।

সেখান থেকে জিতেন্দ্র  কে নিয়ে আমাদের আলোচনা শুরু হয়ে গেল। জিতেন্দ্রর প্রথম ছবিটা যেন কি? কারুর ঠিক মনে পড়ছেনা।

সুভদ্রা বললো জীনে কি রাহ!

কৌশিকীর পুরনো ছবি তে বেশ ভাল ফান্ডা – সে বললো  না না, ওর প্রথম ছবি হলো ফর্জ্‌।

আজকাল আমাদের কিছু মনে থাকেনা, স্মৃতি ক্রমশঃ ক্ষীণ হয়ে যাচ্ছে, এখন আমাদের গুগলই ভরসা। ঝুনকু ফোন খুলে ভুরু কুঁচকে কিছুক্ষণ দেখে বললো, হ্যাঁ ফর্জ ই ওর প্রথম ছবি।

সুভদ্রার ও হিন্দী সিনেমার ফাণ্ডা বেশ ভাল। সে বললো ইস্‌, ফর্জের গান গুলো কি দারুণ, – মস্ত বাহারো কা ম্যায় হুঁ আশিক – আহা – ঝুন্টু তোর মনে আছে আমরা কিরকম হিন্দী ছবি দেখেছি এক সময়। তুই টিকিট কেটে আনতি।

সুভদ্রা এখনো হিন্দী গান বেশ ভালই গায়, সে দুই হাত ছড়িয়ে নাচের ভঙ্গীতে গেয়ে উঠলোঃ সারা জাঁহা হ্যায় মেরে লিয়ে ~

আমাদের সকলের যে বয়েস হচ্ছে, তা এখন আমাদের কথাবার্ত্তা থেকেই  বোঝা যায়। কিছুদিন আগেও আমাদের এই আড্ডায় খুব হাসি ঠাট্টা হতো, আমরা বেড়াতে যাবার কথা বলতাম। ছেলে মেয়ে নাতি নাতনীরা আমাদের আলোচনায় আসতো। এবার দেখলাম  আমরা বেশীর ভাগ সময়ে কথা বলছি আমাদের নিজেদের নিয়ে। আমরা বুঝতে পারছি যে আমাদের জীবনে ক্রমশঃ একটা ছায়া নেমে আসছে। ভাই বোনেরা অনেকেই বিদায় নিয়েছে, আমরা যারা আছি, তারাও একটা বাধ্যতামূলক একা হয়ে যাওয়া আর পরাধীনতার দিকে এগিয়ে চলেছি। আমাদের শরীরে নানা রোগ বাসা বাঁধছে, আমরা হয়তো জানিওনা। আমরা কেউ কেউ যারা কানে কম শুনছি তাদের সাথে বেশ জোরে বা কানের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে কথা বলতে হচ্ছে। খোকন বললো সে কিছুদিন আগে স্নেহদিয়া নামে রাজারহাটে একটা Old age home এ গিয়ে কথা বলে খোঁজখবর করে এসেছে।

এই নিয়ে কিছুদিন আগে প্রচেত গুপ্ত রবিবাসরীয় আনন্দবাজারে একটা প্রবন্ধ লিখেছেন, তার নাম “এ বড় সুখের সময় নয়!”

সব চেয়ে বেশী যেটা বোঝা যাচ্ছে সেটা হল আমাদের স্মৃতিশক্তি খুব দুর্ব্বল হয়ে যাচ্ছে। Dementia বা Alzheimers এখনও হয়নি কারুরই, কিন্তু কোন জায়গা বা কোন সিনেমা বা কারুর নাম  বলতে গেলে কোথাও আটকে যাই, প্রানপণ চেষ্টা করেও কোন নাম  কিছুতেই মনে করতে পারিনা। মাথার ভিতরে memory cell গুলো কোন অদৃশ্য পোকা কুরে কুরে খেয়ে চলেছে।

বিশেষ করে নাম ভুলে যাওয়া টাই সব চেয়ে বেশী। ঝুন্টু বললো ও নাকি Proper noun মনে রাখতে পারেনা। 

বহুদিন আগে, তখন কুয়েতে উইকেন্ডে বন্ধুদের বাড়ীতে আড্ডা বসত। সেই রকম কোন এক আড্ডায় একবার আমাদের এক বন্ধু সিদ্ধার্থ সাহেব বিবি গোলাম সিনেমাটার নাম কিছুতেই মনে করতে পারছিলোনা। তার সেই যন্ত্রণাক্লিষ্ট মুখটা এখনো মনে পড়ে। যাতে আমাদের কারুর মনে পড়ে সেই জন্যে আমাদের নানা clue দিয়ে যাচ্ছিল।   আরে বিমল মিত্রের লেখা বিখ্যাত  উপন্যাস।  আরে সেই যে এক জমিদারের সুন্দরী বৌ সুমিত্রা দেবী একা একা মদ খেতে শুরু করলো! আরে উত্তম কুমার ও ছিলো একটা ছোট রোলে! মনে পড়ছেনা?   

আমি লেখালেখি করি। লিখতে গিয়ে প্রায়ই কোন একটা বিশেষ শব্দ ব্যবহার করতে চাই, সেই শব্দটা আমার জানা, কিন্তু কিছুতেই সেই শব্দটা মনে পড়েনা।  মাথার ভিতরে কোন এক অতল অন্ধকার জায়গায় সে লুকিয়ে থাকে, সেখান থেকে তাকে অনেক চেষ্টা করেও বের করে আনতে পারিনা। গভীর জলের তলায় যেন ডুবে থাকা মণি মুক্তোর মতই লাগে তাদের, ডুবুরী লাগিয়েও যাদের খুঁজে পাওয়া সোজা কাজ নয়। তখন খুব অসহায় লাগে।

আমি ঝুন্টু কে বললাম আমার তো Common noun ও মনে আসেনা রে।

শরীর আমাদের এই সব ছোট ছোট সাবধানবাণী শোনাচ্ছে – যাকে বলে early signal – বিদায়ের সময় আগত ভাই সব! প্রস্তুতি শুরু করো।

ঝুন্টু কৌশিকী কে বললো, “আমরা মান্টুদা’ কে আজ কি একটা ্জিজ্ঞেস করবো ভেবেছিলাম না?” কৌশিকী বলল, “সত্যি, একদম মনে পড়ছেনা।“

আরো অনেক কিছুই এরকম মনে থাকেনা।

যাই হোক, জিতেন্দ্র থেকে আমরা চলে গেলেম নায়িকাদের দিকে। ফর্জে জিতেন্দ্রর নায়িকা কে ছিল? কারুর মনে নেই। সাধনা, নূতন, রেহানা সুলতানা?

আমাদের গুগল বিশেষজ্ঞ ঝুনকু আবার ভুরু কুঁচকে ফোনের দিকে তাকিয়ে বলল, “ববিতা”…

ববিতা নামে যে একজন নায়িকা ছিল তা আমরা ভুলেই গেছি।

আমি বললাম ওফ, সেই সময়ের সিনেমায় নায়ক আর নায়িকারা কি নাচানাচি আর ছোটাছুটিই না করত, মাঠে ঘাটে ,রাস্তা ঘাটে পাহাড়ে গাছের মধ্যে যেখানে হোক, ধেই ধেই করে নেচে প্রেম নিবেদন।

তারাপদদা’র কবিতায় একটা লাইন ছিল~

ভালবাসাবাসি ছাড়া আর কোন কাজ নেই সোমত্থ যুবক যুবতীর।

আমাদের কমবয়েসে শাম্মী কাপুর আর  জিতেন্দ্র এই দু’জন ছিল নাচানাচি তে ওস্তাদ।

কে বেশী সুন্দরী ছিল,নূতন না সাধনা?

এই নিয়ে বেশ কিছু মতভেদ দেখা  গেল। সাধনা কে নিয়ে আমি আমার জীবনের একটা গল্প বললাম।

মার্চ্চ, ১৯৬৩। হায়ার সেকেন্ডারী পরীক্ষার প্রথম দিন। বাবা একটা গাড়ী বলেছেন আমায় পরীক্ষার সেন্টারে নামিয়ে দেবে। আমি মনোহরপুকুরের বাড়ীর  ছোট বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছি। গাড়ীটা আসতে এত দেরী করছে কেন? গত তিন মাস খুব খেটেছি, কিন্তু এখন যেন কিছুই মনে পড়ছেনা, বেশ নার্ভাস লাগছে, ভয়ে বুক দুরদুর করছে।  কি প্রশ্ন আসতে পারে তাই নিয়ে ভেবে যাচ্ছি।

হঠাৎ দেখি রাস্তা দিয়ে একদল ছেলে যাচ্ছে, তারা নিজেদের মধ্যে বেশ চেঁচিয়ে কথা বলতে বলতে  শুনে বুঝলাম তারাও হায়ার সেকেন্ডারী পরীক্ষা দিতে যাচ্ছে, কাছেই কোন স্কুলে তাদের সীট পড়েছে। তাদের সকলেরি হাসি মুখ, চিন্তার লেশমাত্র আছে বলে মনে হলোনা। একজন শুনলাম বলছে “saলা, আমি তো saধনার মুখ টা মনে করে যা খুসী লিখে আসবো মাইরী।“

সাধনা খুব একটা তেমন সুন্দরী না হলেও তখন খুব জনপ্রিয় অভিনেত্রী ছিলেন। কিন্তু সুভদ্রার ভাল লাগতো নূতন কে।

সেই রাজকাপুর আর নূতনের সিনেমাটা যেন কি? দারুন সব গান ছিল মুকেশ আর লতার…

আমি বললাম “আনাড়ী?”

হ্যাঁ, হ্যাঁ, বলে সুভদ্রা গেয়ে উঠলো , “ও চাঁদ খিলা,ও তারে হসে, ও রাত অজব মতওয়ারী হ্যায় – সমঝনে ওয়ালে সমঝ গয়ে হ্যায় – না সমঝে ও আনাড়ী হ্যায়”। হিন্দী গানে সুভদ্রা এখনো অপ্রতিদ্বন্দ্বী যাকে বলে second to none..

এই সব গল্প হতে হতে বেলা দু’টো বেজে গেছে , এবার লাঞ্চ। 

আজকের মেনু হলো খাঁটি বাড়ীর খাবার।  ভাত, ডাল, লাউচিংড়ী, ধোকার ডালনা,  পার্শে মাছ ভাজা,  রুই মাছের ঝোল, কাঁচা আমের চাটনি।  শেষপাতে  মিষ্টি, কৌশিকী এনেছে লাল দই, আর মিঠু এনেছে রাজভোগ আর হিমসাগর আম।

খাওয়া দাওয়া হয়ে গেলে আবার আড্ডা, সেই আড্ডায় এলো অনেক পুরনো দিনের মনোহরপকুরের বাড়ীর পারিবারিক স্মৃতি। আমাদের পিতামহ ব্রজবন্ধু ভৌমিকের লেখা তাঁর বাবা দীনবন্ধু ভৌমিকের সংক্ষিপ্ত জীবনী “পিতৃতর্পন” নিয়ে আলোচনা হলো। আমি বললাম আমাদের ভৌমিক পরিবারের ইতিহাস এবং বংশ তালিকা নিয়ে আমার একটা বই লেখার পরিকল্পনার কথা। সকলে খুব উৎসাহ দিলো আমায়। কিন্তু শুধু মুখের উৎসাহ দিলে তো হবেনা। আমায় তথ্য দিতে হবে। আমি এটা খসড়া করে সবাইকে পাঠাবো বললাম, কোন তথ্য না থাকলে বা তাতে কোন ভুলচুক হলে যেন সবাই যার যার মত করে সেগুলো আমায় সংশোধন করে দেয়।

এদিকে কলকাতায় খুব বাঁদরের উৎপাত শুরু হয়েছে। অনেক জায়গাতেই খবর পাচ্ছি কলকাতায় বাঁদরদের উপদ্রব বাড়ছে। ঝুনকু বললো ওদের পাটুলীর বাড়ীতে নাকি একটা বাঁদর ছানা এসে বাড়ীর ভিতর থেকে কিছু খাবার নিয়ে ছাদে গিয়ে বসে খাচ্ছিল। খবর পেয়ে ঝুনকু নাকি ছাদে গিয়ে বাঁদর ছানা টাকে বাংলায় তুমুল বকেছে। “আর এক বার যদি এরকম বাঁদরামি করিস  তাহলে ঠাসঠাস করে দুই গালে দুই চড় খাবি।“

ঝুন্টু বললো কি আশ্চর্য্য, বাঁদররা তো বাঁদরামি ই করবে।

ঝুনকু বললো না রে, আমার বকুনী খেয়ে বাঁদরবাচ্চা টা ঠিক মানুষের বাচ্চার মত ভয় পেয়ে মুখ লুকিয়ে ফেললো।

খোকন বললো সাবধান ওদের বেশী কাছে যাস্‌না। বাচ্চাটার মা এসে “আমার ছেলে কে কেন বকছো বলে তোকেই দুটো ঠাস ঠাস করে কষিয়ে দুটো চড় মেরে দেবে।‘  

বাঁদর দের নিয়ে একটা বিখ্যাত জোক আছে, সেটা অনেকেই জানে, কিন্তু তা সত্ত্বেও বার বার শুনেও সবাই হো হো করে হাসে।  যেন এই প্রথম শুনলো।

———–

চিড়িয়াখানায় খাঁচার ভিতর থেকে একটি বাঁদর এক ভদ্রলোকের চশমা কেড়ে নেয়।

কি করে এটা সম্ভব হলো?

আসলে হয়েছে কি, খাঁচার সামনে একটা নোটিস টাঙ্গানো ছিল। ভদ্রলোক কৌতূহলী হয়ে খাঁচার খুব কাছে গিয়ে ঝুঁকে নোটিসটা পড়তে গিয়েছিলেন, তাতেই এই বিপত্তি।

নোটিসে লেখা ছিল “সাবধান!! বাঁদরেরা চশমা কাড়িয়া লয়!”

এই গল্পটা শুনে একটি মেয়ে নাকি একটুও না হেসে বলেছিল “সত্যি বাঁদরগুলো যা অসভ্য!”

———–

এবার ও খুব একচোট হাসাহাসি হলো।

বিকেলে কফির সাথে সুভদ্রার তৈরী Banana ব্রেড।

দিনটা বেশ কাটলো।

1 thought on “  নামটা  যেন কি? ইস্‌ মনে পড়ছেনা, এই বল্‌না…

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে।